জাতীয় স্বার্থে কঠোরতা
‘এনবিআর সংস্কার’ বিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর বার্তা
-
আপলোড সময় :
২৯-০৬-২০২৫ ০৫:৪৬:৪৫ অপরাহ্ন
-
আপডেট সময় :
২৯-০৬-২০২৫ ০৫:৪৬:৪৫ অপরাহ্ন
‘এনবিআর সংস্কার’ বিরোধী আন্দোলনকারীদের একাংশ। ছবি- মেহেদি হাসান
অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সব কার্যক্রমকে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা হিসেবে ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্রুত কর্মস্থলে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, এই নির্দেশ অমান্য করলে দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। রোববার (২৯ জুন) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বাজেট ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনার সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো দুর্বল রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থা। দেশের প্রয়োজনের তুলনায় রাজস্ব সংগ্রহ অনেক কম, যার মূল কারণ রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থায় বিদ্যমান দুর্বলতা, অনিয়ম এবং দীর্ঘদিনের দুর্নীতি।
এই প্রেক্ষাপটে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এনবিআরের একটি অংশ গত দুই মাস ধরে রাজস্ব সংগ্রহ, আমদানি-রপ্তানি এবং ব্যবসা-বাণিজ্য কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। সরকার তাদের এই ধরনের কার্যক্রমকে সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আন্দোলনকারীরা কেবল সংস্কারের বিরোধিতায়ই সীমাবদ্ধ থাকেনি, তারা অর্থবছরের শেষ দুই মাসে পরিকল্পিতভাবে রাজস্ব আদায় কার্যক্রমে মারাত্মক অচলাবস্থা তৈরি করেছে। এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এনবিআর ভবন ছাড়াও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর, বেনাপোল স্থলবন্দর, সোনামসজিদ স্থলবন্দর এবং ঢাকা কাস্টম হাউসসহ দেশের সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনের কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে শুল্কায়নসহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
দাবি পূরণের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া হলেও আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে অনমনীয় অবস্থানে অটল রয়েছে। সরকার মনে করে, আলোচনার মাধ্যমেই গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানো যেত। কিন্তু তারা তা না করে দেশের অর্থনীতির স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত করছে, যা জাতীয় স্বার্থ এবং নাগরিক অধিকার পরিপন্থী।
এই পরিস্থিতিতে দেশের আমদানি-রপ্তানি এবং বৈদেশিক বাণিজ্য সচল রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সকল কাস্টমস হাউস, ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি), বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনের সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সরকার আশা প্রকাশ করে বলেছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দ্রুত কর্মস্থলে ফিরে আসবেন এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী কার্যক্রম থেকে সরে আসবেন। অন্যথায় দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : নিজস্ব প্রতিবেদক
কমেন্ট বক্স